ষষ্ঠ শ্রেণির ইতিহাস
নবম অধ্যায় ভারত ও সমকালীন বহির্বিশ্ব
১) কোন অঞ্চলকে মেসোপটেমিয়া বলা হয়?
উত্তর :- টাইগ্ৰিস ও ইউফ্রেটিস নদীর মাঝখানের অঞ্চলকে গ্ৰিকরা বলতো মেসোপটেমিয়া।
২) মেসোপটেমিয়া শব্দের অর্থ কী?
উত্তর :- দুই নদীর মধ্যবর্তী দেশ।
৩) মেসোপটেমিয়া সভ্যতা কোন কোন নদীর মাঝে গড়ে উঠেছিল?
উত্তর :- টাইগ্ৰিস ও ইউফ্রেটিস নদীর মাঝখানে।
৪) প্রাচীনকালে মেসোপটেমিয়া অঞ্চলে কোন সভ্যতা ছিল?
উত্তর :- সুমেরীয় সভ্যতা।
৫) সুমেরের লিপিকে ইংরেজিতে কী বলে?
উত্তর :- কিউনিফর্ম লিপি।
৬) কারা প্রথম কাঠের চাকার ব্যবহার শুরু করেছিল?
উত্তর :- সুমেরের লোকেরা।
৭) কে প্রথম লিখিত আইন চালু করেছিলেন?
উত্তর :- ব্যাবিলনের রাজা হামুরাবি।
৮) মিশরকে নীলনদের দান কে বলেছেন?
উত্তর :- গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস।
৯) মিশরীয় সভ্যতা কোথায় অবস্থিত?
উত্তর :- উত্তর-পূর্ব আফ্রিকায় নীলনদের তীরে।
১০) মিশরের রাজা বা শাসকদের কী বলা হতো?
উত্তর :- ফ্যারাও।
১১) কারা, কেন পিরামিড তৈরি করেছিল?
উত্তর :- মিশরের লোকেরা মৃতদেহ রাখার জন্য পিরামিড বানিয়েছিল।
১২) মিশরের শাসকদের মৃতদেহকে কোথায় সমাধিস্থ করা হত?
উত্তর :- পিরামিডে।
১৩) কারা প্রথম কাগজের ব্যবহার শুরু করেছিল?
উত্তর :- মিশরীয়রা অর্থাৎ মিশরের লোকেরা।
১৪) কাগজের ইংরেজি শব্দ কী?
উত্তর :- পেপার।
১৫) "পেপার" শব্দটি কোথা থেকে এসেছে?
উত্তর :- প্যাপিরাস শব্দ থেকে।
১৬) মিশরের লিপিকে কী বলা হত?
উত্তর :- হায়ারোগ্লিফ লিপি।
১৭) মিশরীয় লিপির প্রধান বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর :- বর্ণ ও ছবি মিলিয়ে লেখা লিপি।
১৮) কারা প্রথম কাগজ বানানোর ও কাঠের হরফ বানিয়ে ছাপা কৌশল তৈরি করে?
উত্তর :- চীন দেশের মানুষ।
১৯) কোন দেশে বারুদের ব্যবহার হতো?
উত্তর :- চীন দেশে।
২০) পলিস বা নগর রাষ্ট্র কাকে বলে?
উত্তর :- পাহাড়ে ঘেরা গ্ৰিসে অনেকগুলি ছোটো ছোটো রাষ্ট্র গড়ে উঠেছিল। এই রাষ্ট্রগুলিকে বলা হত নগর রাষ্ট্র বা পলিস।
২১) এথেন্স ও স্পার্টার যুদ্ধের কথা কোন ঐতিহাসিকের লেখায় পাওয়া যায়?
উত্তর :- ঐতিহাসিক থুকিডাইডিস।
২২) শক ও কুষাণ যুগে স্ট্যাট্রাপদের কী নামে অভিহিত করা হতো?
উত্তর :- ক্ষত্রপ।
২৩) "স্ট্যাট্রাপি" কথার অর্থ কী?:
উত্তর :- প্রদেশ।
২৪) পুরাণ সাহিত্যে কাদের "যবন" বলা হয়েছে?
উত্তর :- ব্যাকট্রিয়ার গ্রিক রাজাদের।
২৫) ইন্দো-গ্রিক রাজাদের মধ্যে বিখ্যাত কে ছিলেন?
উত্তর :- রাজা মিনান্দার।
২৬) রাজা মিনান্দার বৌদ্ধ সাহিত্য কী নামে পরিচিত?
উত্তর :- মিলিন্দ।
২৭) মিনান্দারের রাজধানী কোথায় ছিল?
উত্তর :- সাকল বা শিয়ালকোট।
২৮) মিনান্দার ও নাগসেনের প্রশ্নোত্তর কোন গ্রন্থে আছে?
উত্তর :- মিলিন্দপঞহো।
২৯) চলন্ত ঘোড়ার পিঠে বসে পিছনে ঘুরে তির ছোঁড়ার কায়দা ভারতে কারা প্রচলন করে?
উত্তর :- পহ্লবরা।
৩০) স্কাইথিয়রা ভারতীয় উপমহাদেশে কী নামে পরিচিত ছিলেন?
উত্তর :- সেক বা শক।
৩১) গ্রিক শাসক সেলিউকাস ভারতবর্ষে কোন কোন দূত পাঠিয়েছিলেন?
উত্তর :- মেগাস্থিনিস এবং ডায়াকামাস।
৩২) কোন রাজা বিক্রমাব্দ প্রচলন করেন?
উত্তর :- শক শাসক প্রথম অয়।
৩৩) কোন কোন সাগর "ইরিথ্রিয়ান সাগর" নামে পরিচিত ছিল?
উত্তর :- ভারত মহাসাগর, লোহিত সাগর এবং পারস্য উপসাগর।
৩৪) তোরমান এবং মিহিরকুল কে ছিলেন?
উত্তর :- হূণ নেতা।
৩৫) কাবেরী বদ্বীপ এলাকার বিখ্যাত বন্দরটির নাম কী?
উত্তর :- কাবেরীপট্টিনম।
৩৬) ফাসিয়ানের লেখা ভারত ভ্রমনবৃত্তান্তটির নাম কী?
উত্তর :- ফো-কুয়ো-কি।
৩৭) ফাসিয়ান বাংলার কোন্ বন্দর থেকে জাহাজে উঠেছিলেন?
উত্তর :- তাম্রলিপ্ত।
৩৮) "ফো-কুয়ো-কি" বইয়ের বিষয়বস্তু কী ছিল?
উত্তর :- ফাসিয়ানের ভারত ভ্রমণের অভিজ্ঞতা।
৩৯) যবনিকা কী?
উত্তর :- সংস্কৃত ভাষায় নাটকের পর্দাকে বোঝায়।
৪০) সুয়ান জাং কোন্ পন্ডিতের কাছে শিক্ষালাভ করেন?
উত্তর :- পন্ডিত শীলভদ্র।
৪১) সুয়ান জাং কার আমলে ভারতে আসেন?
উত্তর :- হর্ষবর্ধনের আমলে।
৪২) কুমারজীব কার কাছে বৌদ্ধ ধর্ম বিষয়ে শিক্ষালাভ করেন?
উত্তর :- বন্ধুদত্তের কাছে।
৪৩) চিনের সঙ্গে রোমের বাণিজ্যের প্রধান দ্রব্য কী ছিল?
উত্তর :- রেশম।
সঠিক উত্তর নির্বাচন করো।
৪৪) হেরোডোটাসের মতে "ইন্দুস' ছিল পারসিক সাম্রাজ্যের একটি -
ক) প্রদেশ
খ) দেশ
গ) জেলা
ঘ) মহকুমা
উত্তর :- ক) প্রদেশ।
৪৫) অম্ভি ছিলেন -
ক) পাটলিপুত্রের রাজা
খ) গ্রিসের রাজা
গ) তক্ষশীলা রাজা
ঘ) মিশরের ফ্যারাও
উত্তর :- গ) তক্ষশীলা রাজা।
৪৬) ব্যাকট্রিয়ার গ্রিক রাজাদের বলা হত -
ক) ক্ষত্রপ
খ) যবন
গ) স্ট্যাট্রাপ
ঘ) ফ্যারাও
উত্তর :- খ) যবন।
৪৭) সেন্ট থমাস খ্রিস্টধর্ম প্রচারের জন্য ভারতীয় উপমহাদেশে এসেছিলেন-
ক) আলেকজান্ডার
খ) হর্ষবর্ধন
গ) মিনান্দার
ঘ) গন্ডোফারনেস -এর আমলে।
উত্তর :- ঘ) গন্ডোফারনেস -এর আমলে।
৪৮) পশ্চিম উপকূলের নর্মদা নদীর তীরে সেরা বন্দর ছিল-
ক) তাম্রলিপ্ত
খ) কালিকট
গ) ভৃগুকচ্ছ
ঘ) বোম্বাই
উত্তর :- গ) ভৃগুকচ্ছ।
প্রতিটি প্রশ্নের মান ২
১) হিদুষ কী?
উত্তর :- পারসিকরা 'স' কে 'হ' উচ্চারণ করত এবং লিখত। পারস্যের শাসক দরায়বৌষের লেখা থেকে "হিদুষ'' শব্দটি পাওয়া যায়। "হিদুষ" বলতে মূলত সিন্ধুনদবিধৌত অঞ্চলগুলিকে বোঝাত।
২) আলেকজান্ডারের ভারতীয় উপমহাদেশে অভিযানের কি মৌর্য সাম্রাজ্য গড়ে ওঠার উপরে কোন প্রভাব ছিল?
উত্তর :- আলেকজান্ডার ভারতীয় উপমহাদেশে অভিযান করে উত্তর-পশ্চিম অংশের ছোটো ছোটো অনেক রাজ্যের রাজাকে হারিয়ে দিয়েছিলেন। আবার তক্ষশিলার রাজা অম্ভির মতো অনেক রাজা আলেকজান্ডারকে সহায়তা করেন। আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর ওই অঞ্চলে গ্রিক সেনাপতিদের শাসন ছিল। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য গ্রিকদের পরাজিত করার ফলে ওই অঞ্চলে মগধের ক্ষমতা বিস্তার সহজ হয়।
৩) রেশম পথ কী?
উত্তর :- রোম সাম্রাজ্যে চিনা রেশমের চাহিদা খুব ছিল। চিন থেকে কাশগড় হয়ে বিভিন্ন পথে রেশম রোম সাম্রাজ্যে পৌঁছতো। চিন থেকে রোম সাম্রাজ্যে স্থলপথে রেশম ব্যবসার এই পথকে রেশম পথ বলা হয়।
৪) তাম্রলিপ্ত বন্দর কেন বিখ্যাত ছিল?
উত্তর :- প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের একটি প্রধান-বন্দর নগর ছিল তাম্রলিপ্ত। এটি সম্ভবত এখনকার পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের কাছাকাছি অবস্থিত ছিল। সুয়ান জাং ও ফাসিয়ান তাম্রলিপ্ত বন্দরের কথা বলেছেন। তাম্রলিপ্ত স্থলপথ ও জলপথে যাওয়া যেত। বাণিজ্য ছাড়াও পড়াশোনার জন্য তাম্রলিপ্ত যথেষ্ট বিখ্যাত ছিল।
৫) মিনান্দার কে ছিলেন?
উত্তর :- মিনান্দার ছিলেন ইন্দো-গ্রিক রাজাদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত রাজা। ব্যাকট্রিয়া, গন্ধার ও কান্দাহার অঞ্চলে তার শাসন ছিল। তার রাজধানী ছিল সাকল বা বর্তমান পাকিস্তানের শিয়ালকোট।
৬) "যবনিকা" কী?
উত্তর :- "যবনিকা" বলতে সংস্কৃত ভাষায় নাটকের পর্দাকে বোঝায়। 'যবন' শব্দ থেকে যবনিকা শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। গ্রিকরাই এই পর্দা ফেলার প্রথা চালু করেছিল। তাদের 'যবন' নাম থেকেই "যবনিকা" শব্দটি তৈরি হয়েছিল।
৭) কুমারজীব কে ছিলেন?
উত্তর :- কুমারজীব ছিলেন একজন বৌদ্ধ পন্ডিত। তিনি বৌদ্ধ ধর্ম ও বৌদ্ধ দর্শন প্রচারের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন। কুমারজীবের বাবা কুমারযান কুচির রাজার রাজগুরু ছিলেন। কুমারজীব বৌদ্ধ ধর্ম ও সাহিত্য পড়াশোনা করে বিখ্যাত পন্ডিত হন।
৮) প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগের ক্ষেত্রে পড়াশুনার কী ভূমিকা ছিল বলে তোমার মনে হয়?
উত্তর :- প্রাচীন ভারতীয় উপমহাদেশের সঙ্গে অন্যান্য অঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্নভাবে ঘটলেও পড়াশোনার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এই সময় বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পড়াশোনার জন্য যারা ভারতে এসেছিলেন তাদের মধ্যে ফাসিয়ান ও সুয়ান জাং ছিলেন অন্যতম। এছাড়া ভারত থেকে পড়াশোনার জন্য চীনে গিয়েছিলেন পণ্ডিত পরমার্থ এবং কুমারজীব প্রমূখ।
ফাসিয়ান :- ৩৯৯ খ্রিস্টাব্দে ফাসিয়ান ভারতে আসেন। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে তিনি পাটলিপুত্রে বৌদ্ধ ধর্ম ও সাহিত্য বিষয়ে পড়াশোনা করেন।
সুয়ান জাং :- ৬৩০ খ্রিস্টাব্দে সুয়ান জাং ভারতে আসেন। তিনি নালন্দা মহাবিহারে পণ্ডিত শীলভদ্রের কাছে পড়াশোনা করেন।

মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন