শ্রেণি :- সপ্তম শ্রেণি
বিষয় :- ইতিহাস
অধ্যায় :- পঞ্চম অধ্যায়
অধ্যায়ের নাম :- মুঘল সাম্রাজ্য
প্রতিটি প্রশ্নের মান :- ১
১) ভারতবর্ষের প্রথম মুঘল বাদশাহ কে ছিলেন?
উত্তর :- জহিরউদ্দিন মহম্মদ বাবর।
২) তৈমুর লঙ কত সালে ভারত আক্রমণ করেন?
উত্তর :- ১৩৯৮ খ্রিস্টাব্দে।
৩) বাবর কত বছর বয়সে ফরগনার শাসক হন?
উত্তর : ১৪৯৪ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ১২ বছর বয়সে।
৪) বাদশাহ শব্দটি কোন ভাষার শব্দ?
উত্তর :- ফরাসি শব্দ।
৫) বাবুর কত খ্রিস্টাব্দে বাদশাহ ( বাদশাহ ) উপাধি নেন?
উত্তর :- ১৫০৭ খ্রিস্টাব্দে।
৬) সার্বভৌম শাসক বলতে কী বোঝো?
উত্তর :- সার্বভৌম শাসক বলতে বোঝায় সর্বভূমির উপর যার আধিপত্য।
৭) পানিপথের প্রথম যুদ্ধ কত সালে কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উত্তর :- ১৫২৬ খ্রিস্টাব্দে বাবর এর সঙ্গে ইব্রাহিম লোদির।
৮) চলদি রানের যুদ্ধ কত সালে হয়েছিল?
উত্তর :- ১৫১৪ খ্রিস্টাব্দে। তুরস্কের অটোমান তুর্কি সেনাবাহিনীর সঙ্গে পারস্যের রাজশক্তি সফাবিদের।
৯) জামের যুদ্ধ কত সালে কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উত্তর :- ১৫২৮ খ্রিস্টাব্দে সফাবিদের সঙ্গে উজবেকদের।
১০) খানুয়ার যুদ্ধ কত সালে হয়েছিল?
উত্তর :- ১৫২৭ খ্রিস্টাব্দে রানা সংগ্রাম সিংহের সঙ্গে বাবরের।
১১) ঘর্ঘরার যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল?
উত্তর :- ১৫২৯ খ্রিস্টাব্দে বাবরের সঙ্গে আফগানদের।
১২) চৌসার যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল?
উত্তর :- ১৫৩৯ খ্রিস্টাব্দে হুমায়ুনের সঙ্গে শেরখানের।
১৩) বিল গ্রামের যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দে হয়েছিল?
উত্তর :- ১৫৪০ খ্রিস্টাব্দে হুমায়ুনের সঙ্গে শেরখানের।
১৪) পাট্টা এবং কবুলিয়ত প্রথা কে চালু করেন?
উত্তর :- শেরশাহ।
১৫) গ্র্যান্ড ট্র্যাঙ্ক রোড কে নির্মাণ করেন?
উত্তর :- শেরশাহ।
১৬) গ্র্যান্ড ট্র্যাঙ্ক রোডের পূর্ব নাম কি ছিল?
উত্তর :- সড়ক - ই আজম।
১৭) শেরশাহ প্রথম কোথা থেকে কোথায় গ্র্যান্ড ট্র্যাঙ্ক রোড নির্মাণ করেন?
উত্তর :- বাংলার সোনারগাঁ থেকে পেশোয়ার পর্যন্ত।
১৮) কে ঘোড়ার পিঠে ডাক ব্যবস্থার প্রচলন করেন?
উত্তর :- শেরশাহ।
১৯) দাগ ও হুলিয়া প্রথা কে চালু করেন?
উত্তর :- শেরশাহ।
২০) আকবর কত বছর বয়সে শাসক হন?
উত্তর :- ১৩ বছর বয়সে।
২১) আকবরের প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?
উত্তর :- হিমু।
২২) পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দ হয়েছিল?
উত্তর :- ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে বৈরাম খানের সাহায্যে আকবরের সঙ্গে আফগানদের।
২৩) আকবর কত খ্রিস্টাব্দে চিতোর জয় করেন?
উত্তর :- ১৫৬৮ খ্রিস্টাব্দে।
২৪) হলদিঘাটের যুদ্ধ কত খ্রিস্টাব্দে কাদের মধ্যে হয়েছিল?
উত্তর :- ১৫৭৬ খ্রিস্টাব্দে আকবর এবং রানা প্রতাপ এর মধ্যে।
২৫) কোন রাজার নবরত্ন সভা ছিল?
উত্তর :- আকবর।
২৬) বীরবলের আসল নাম কি ছিল?
উত্তর :- মহেশ দাস।
২৭) আকবরের আমলে প্রধানমন্ত্রী কে ছিলেন?
উত্তর :- বীরবল।
২৮) "আকবরনামা" - গ্রন্থটি কার রচনা?
উত্তর :- আবুল ফজল।
২৯) আকবরের আমলে দুজন ঐতিহাসিকের নাম লিখ।
উত্তর :- আবুল ফজল এবং আব্দুল কাদির বদাউনি।
৩০) আবদুল কাদির বদাউনির লেখা গ্রন্থটির নাম কি?
উত্তর :- মুন্তাখাব উৎ তওয়ারিখ।
৩১) দুজন বারো ভূঁইয়ার নাম লিখ।
উত্তর :- প্রতাপাদিত্য, চাঁদ রায়, কেদার রায়, ইশা খান।
৩২) ওয়াতন কথাটির অর্থ কি?
উত্তর :- নিজের ভিটে বা এলাকা, স্বদেশ।
৩৩) মারওয়াড় শব্দটি কোন শব্দ থেকে এসেছে?
উত্তর :- মরু ওয়াড়।
৩৪) ওয়াড় শব্দের অর্থ কি?
উত্তর :- একটি বিশেষ অঞ্চল।
৩৫) মালিক অম্বর কে ছিলেন?
উত্তর :- আহমেদ নগরের প্রধানমন্ত্রী।
৩৬) দীন-ই -ইলাহি এর আদর্শ কে প্রচার করেন?
উত্তর :- সম্রাট আকবর।
৩৭) মনসবদারি ব্যবস্থা কে চালু করেন?
উত্তর :- আকবর।
৩৮) জাবতি কি?
উত্তর :- আকবরের আমলে জমি জরিপের ভিত্তিতে রাজস্ব নির্ধারণ করার পদ্ধতিকে বলা হয় জাবতি।
৩৯) কে কত সালে দহশালা ব্যবস্থা চালু করেন?
উত্তর :- ১৫৮০ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট আকবর।
৪০) হুমায়ুন শব্দের অর্থ কি?
উত্তর :- ভাগ্যবান।
৪১) আকবরের রাজস্ব মন্ত্রীর নাম কি ছিল?
উত্তর :- টোডরমল।
৪২) মনসব শব্দের অর্থ কি?
উত্তর :- পদমর্যাদা।
৪৩) সুলহ ই কুল কথাটির অর্থ কি?
উত্তর :- পরধর্ম সহিষ্ণুতা।
৪৪) মারওয়াড় শব্দটি কোন শব্দ থেকে এসেছে?
উত্তর :- মরু ওয়াড়।
৪৫) ঔরঙ্গজেব কত সালে মারা যান?
উত্তর :- ১৭০৭ খ্রিস্টাব্দে।
৪৬) হিমু কার সেনাপতি ছিলেন?
উত্তর :- আদিল শাহের।
৪৭) জাহাঙ্গিরের আমলে কোন শিখ গুরু কে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়?
উত্তর :- অর্জুন।
৪৮) রাজপুত নেতাদের মধ্যে কে মুঘল সম্রাটদের সঙ্গে জোট বাঁধেননি?
উত্তর :- রানা প্রতাপ সিংহ।
৪৯) ঘর্ঘরার যুদ্ধে বাবরের প্রতিদ্বন্দ্বী কে ছিলেন?
উত্তর :- নসরৎ শাহ।
৫০) মুঘলরা তৈমুরের বংশধর হিসেবে গর্ব করত কেন?
উত্তর :- কারণ তৈমুর একসময় উত্তর ভারত আক্রমণ করে দিল্লি দখল করেছিলেন।
৫১) হুমায়ুনকে একসময় ভারত ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল কেন?
উত্তর :- কারণ তিনি শেরশাহের কাছে যুদ্ধে পরাজিত হয়েছিলেন।
৫২) মহেশ দাসের নাম বীরবল হয়েছিল কেন?
উত্তর :- কারণ তিনি খুব বুদ্ধিমান ছিলেন।
৫৩) ঔরঙ্গজেবের আমলে বাংলায় সামুদ্রিক বাণিজ্যের উন্নতি হয় কেন?
উত্তর :- কারণ তিনি পর্তুগিজ জলদস্যুদের যুদ্ধে হারিয়ে দিয়েছিলেন।
৫৪) আকবরের আমলে জমি জরিপের পদ্ধতি কে বলা হত জাবতি। - জাবত শব্দের অর্থ কি?
উত্তর :- জাবত মানে জমির প্রকৃতি দেখে রাজস্ব নির্ধারণ করা।
প্রতিটি প্রশ্নের মান ২ অথবা ৩
৫৫) মুঘলরা কেন নিজেদের বাদশাহ বলতো?
উত্তর :- বাদশাহ বা পাদশাহ একটি ফারসি শব্দ। 'পাদ' - শব্দের অর্থ প্রভু এবং 'শাহ' - শব্দের অর্থ শাসক। পাদ এবং শাহ দুটি শব্দেরই অর্থ কাছাকাছি হওয়া সত্বেও মোঘলরা সার্বভৌম শাসকের ক্ষেত্রে পাদশাহ অথবা বাদশাহ শব্দটি ব্যবহার করত। বাদশাহ উপাধি ব্যবহার করে মোঘলরা বোঝাতে চাইল যে তাদের শাসন করার ক্ষমতা অন্য কারোর অনুমোদনের উপর নির্ভরশীল নয়।।
৫৬) হুমায়ূন কেন আফগানদের কাছে হেরে গিয়েছিলেন?
উত্তর :- হুমায়ুন আফগানদের কাছে হেরে গিয়েছিলেন। তার কারণ গুলি হল -
i) হুমায়ূনের আমলে সামরিক অভিজাতদের সঙ্গে মুঘলদের যে পারিবারিক এবং বংশগত সুসম্পর্ক ছিল তা আলগা হয়ে যায়।
ii) হুমায়ুন তৈমুরীয় নীতি মেনে ভাইদের মধ্যে তার সাম্রাজ্য ভাগ করে দেন নি। কেবল কিছু অংশের দায়িত্ব দিয়েছিলেন মাত্র। ফলে তার ভাইরা তা রক্ষার তাগিদ অনুভব করেননি।
iii) চুনার দুর্গ জয়ের পর হুমায়ুন আমোদ - প্রমোদে মত্ত হয়ে পড়লে শেরশাহ সেই সুযোগ গ্রহণ করেছিলেন।
৫৭) সুলহ - ই - কুল কী?
উত্তর :- সুলহ ই কুল কথাটির অর্থ হল - পরধর্ম সহিষ্ণুতা। হিন্দু প্রধান ভারতবর্ষে সুবিশাল সাম্রাজ্য গঠন ও তার স্থায়িত্ব রক্ষার জন্য আকবর সুলহ ই কুল নীতি গ্রহণ করেন। এই নীতি অনুযায়ী যে কোন ধর্মের মানুষই নিজ নিজ ধর্মাচরণ করতে পারবে। রাষ্ট্র কারো প্রতি পক্ষপাত করবে না।
৫৮) ঔরঙ্গজেবের রাজত্বকালে কেন মোঘল অভিজাতদের মধ্যে রেষারেষি বেড়ে গিয়েছিল?
উত্তর :- ঔরঙ্গজেব কর্তৃক বিজাপুর ও গোলকুন্ডা জয়ের পর দক্ষিণ ভারতের অভিজাতরা মনসব পাওয়া নিয়ে তাদের মধ্যে রেষারেষি শুরু করে। এছাড়া অভিজাতরা ব্যক্তিগত স্বার্থে ক্ষমতার অপব্যবহার শুরু করে। এর ফলে সম্রাটের সঙ্গে এবং অভিজাত গোষ্ঠীগুলির নিজেদের মধ্যেও সম্পর্কের অবনতি ঘটে।
৫৯) মোগল শাসন ব্যবস্থায় সুবা প্রশাসনের পরিচয় দাও।
উত্তর :- প্রাদেশিক শাসনের সুবিধার জন্য আকবর তার সাম্রাজ্যকে ১৫ টি প্রদেশে ভাগ করেন। এই প্রদেশ গুলি কে সুবা বলা হত। সুবা শাসন করতেন সিপাহশালার বা সুবাদার। তিনি সুবার আইন-শৃঙ্খলা ও ফৌজদারি মামলার দায়িত্ব সামলাতেন। তবে সুবাদারের রাজস্ব আদায়ের ক্ষমতা ছিল না বলেই মনে হয়। সুবা গুলিকে ভাগ করা হতো কয়েকটি সরকারে এবং সরকার গুলি ভাগ করা হতো পরগণাতে।
প্রশ্নের মান ৫
৬০) শেরশাহের শাসনব্যবস্থায় কি কি মানবিক চিন্তার পরিচয় তুমি পেয়েছ তা লেখো।
উত্তর :- শেরশাহ মাত্র পাঁচ বছরে শাসনকালে এক সুষ্ঠু ও উন্নত শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন। তাঁর শাসনব্যবস্থার প্রধান লক্ষ্যই ছিল মানব কল্যাণ। শেরশাহের প্রশাসনিক ব্যবস্থা, রাজস্ব ব্যবস্থা ও জনহিতকর কাজের সঙ্গে সম্রাট আকবরের শাসনব্যবস্থার মিল ছিল।
শেরশাহের শাসনব্যবস্থার মানবিক দিক :-
i ) রাস্তা নির্মাণ :- সাম্রাজ্যের বিভিন্ন স্থানের মধ্যে যাতায়াতের সুবিধার জন্য শেরশাহ বহু রাস্তা নির্মাণ করেন। তিনি গ্র্যান্ড ট্রাংক রোড নির্মাণ করেন।
ii ) সরাইখানা নির্মাণ :- পথচারীদের সুবিধার জন্য রাস্তার দু'পাশে শেরশাহ গাছ লাগানোর ব্যবস্থা করেন এবং সরাইখানা নির্মাণ করেন।
iii ) ডাক ব্যবস্থা প্রবর্তন :- শেরশাহ ঘোড়ার পিঠে চড়ে ডাক ব্যবস্থা নতুন করে চালু করেন। এর ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটে।
iv ) পাট্টা :- জমিতে কৃষকের আধিকারের স্বীকৃতি দিতে শেরশাহ পাট্টা দেওয়া চালু করেন।
v ) রাজস্ব মুকুব :- দুর্ভিক্ষ বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে উৎপাদন ব্যাহত হলে রাজস্ব মুকুব করা হতো।
vi ) বিচার ব্যবস্থা :- শেরশাহের বিচারব্যবস্থা ছিল নিরপেক্ষ ও উন্নতমানের।
সপ্তম শ্রেণীর প্রতি ছাত্রছাত্রীকে অনুরোধ করা হচ্ছে তোমরা এই প্রশ্ন ও উত্তর গুলি অতি অবশ্যই মুখস্থ করবে। তোমাদের আগামী পরীক্ষায় পঞ্চম অধ্যায় থেকে বেশিরভাগ প্রশ্ন এখান থেকেই আসবে। অনুশীলনীর গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলির উত্তর এখানে দেওয়া আছে। তাই এই প্রশ্নোত্তর গুলি পড়লে তোমাদের কোন রেফারেন্স বইয়ের প্রয়োজন পড়বে না। পরবর্তী পোস্টে অন্যান্য অধ্যায় গুলির প্রশ্ন ও উত্তর দেওয়া হবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন