প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা, আজ আমরা এই অংশে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের অষ্টম শ্রেণির ভূগোল বিষয়ের ষষ্ঠ অধ্যায় "জলবায়ু অঞ্চল "অংশের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর গুলি সম্পর্কে আলোচনা করলাম। এই প্রশ্ন - উত্তর গুলি তোমরা অনুশীলন করলে আগামী বার্ষিক পরীক্ষায় ভূগোল বিষয়ে খুব ভালো ফলাফল করতে পারবে।
এই অধ্যায়টি বার্ষিক পরীক্ষার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে ছোট এবং বড় মিলিয়ে একাধিক প্রশ্ন আসবে। তাই তোমরা ভালো ফলাফলের জন্য এই প্রশ্নোত্তর গুলি অবশ্যই মুখস্থ করবে।
Some Important Geography questions and the answer for the students of class 8 of West Bengal board of secondary education WBBSE. Chapter number 6, Jolbayu anchal.
শ্রেণি :- অষ্টম শ্রেণি
অধ্যায় :- ষষ্ঠ অধ্যায়
অধ্যায়ের নাম :- জলবায়ু অঞ্চল।
প্রতিটি প্রশ্নের মান ১
১) নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলের অক্ষাংশগত অবস্থান লিখো।
উত্তর :- নিরক্ষরেখার দুই পাশে সাধারণত ৫ ° থেকে ১০ ° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে।
২) 4 O' clock Rain কোন জলবায়ু অঞ্চলে দেখা যায়?
উত্তর :- নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলে।
৩) নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলে কি কি স্বাভাবিক উদ্ভিদ জন্মায়?
উত্তর :- রবার, রোজ উড, ব্রাজিল নাট, আয়রন উড, বাঁশ, মেহগনি পাম কোকো সিঙ্কোনা ইত্যাদি।
৪) নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলে কি কি বন্যপ্রাণী দেখা যায়?
উত্তর :- বাদর, গরিলা, শিম্পাঞ্জি, ওরাং ওটাং, হাতি, গন্ডার
৫) নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলে বসবাসকারী দুটি অধিবাসীর নাম লিখ।
উত্তর :- পিগমি, রেড ইন্ডিয়ান, বান্টু।
৬) জাইরে অববাহিকায় বসবাসকারী অধিবাসীদের কি বলা হয়?
উত্তর :- পিগমি।
৭) উচ্চ আমাজন অববাহিকায় কোন অধিবাসীরা বসবাস করে?
উত্তর :- রেড ইন্ডিয়ান।
৮) মৌসিম কথাটির অর্থ কি?
উত্তর :- ঋতু।
৯) মৌসিম শব্দটি কোন ভাষার শব্দ?
উত্তর :- আরবি শব্দ।
১০) ভারত কোন জলবায়ু অঞ্চলে অবস্থিত?
উত্তর :- মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলে।
১১) মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলে কি ধরনের স্বাভাবিক উদ্ভিদ জন্মায়?
উত্তর :- পর্ণমোচী প্রকৃতির উদ্ভিদ।
১২) মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলে কি কি বন্যপ্রাণী দেখা যায়?
উত্তর :- হাতি, গন্ডার, চিতা, হরিণ, নেকড়ে, বানর শিয়াল, হায়না, সাপ ইত্যাদি।
১৩) "শীতকালীন বৃষ্টিপাতের দেশ" কোন জলবায়ু অঞ্চল কে বলা হয়?
উত্তর :- ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চল।
১৪) কোন জলবায়ু অঞ্চল পৃথিবীর "ফলের ঝুড়ি" নামে পরিচিত?
উত্তর :- ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চল।
১৫) ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলের প্রধান কৃষিজ ফসল কি?
উত্তর :- গম।
১৬) ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলে কি কি ফলের চাষ হয়?
উত্তর :- আঙ্গুর, জলপাই, আপেল, নাশপাতি, কমলালেবু, পিচ, খুবানি, আখরোট, বাদাম, কু, ডুমুর ইত্যাদি।
১৭) পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র শিল্প কোথায় গড়ে উঠেছে?
উত্তর :- ক্যালিফোর্নিয়ার হলিউডে।
১৮) উত্তর গোলার্ধের শীতলতম স্থান কোনটি?
উত্তর :- ভারখয়ানস্ক।
১৯) তুন্দ্রা জলবায়ু অঞ্চলে কি কি স্বাভাবিক উদ্ভিদ জন্মায়?
উত্তর :- মস, লাইকেন।
২০) তুন্দ্রা জলবায়ু অঞ্চলে কি কি বন্যপ্রাণী দেখা যায়?
উত্তর :- তিমি, মেরু ভালুক, মেরু শিয়াল, ক্যারিবু ইত্যাদি।
২১) নিরক্ষীয় অঞ্চলে রাত্রি কি নামে পরিচিত?
উত্তর :- ক্রান্তীয় শীতকাল।
২২) গ্রীন ল্যান্ড, কানাডা, আলাস্কায় কোন উপজাতির মানুষ বাস করে?
উত্তর :- এস্কিমো।
২৩) এস্কিমো শব্দের অর্থ কি?
উত্তর :- কাঁচা মাংস খাদক।
২৪) তুন্দ্রা জলবায়ু অঞ্চলে গুঁড়ো গুঁড়ো শুকনো তুফারের ঝড় কে কি বলে?
উত্তর :- ব্লিজার্ড।
২৫) কোন জলবায়ু অঞ্চলে ম্যাকাও পাখি দেখা যায়?
উত্তর :- নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলে।
২৬) ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলের "প্রতিফলক বৃক্ষ" কোনটি?
উত্তর :- জলপাই।
২৭) নিশীথ সূর্যের দেশ কাকে বলে?
উত্তর :- নরওয়ের হ্যামারফেস্ট বন্দরকে।
২৮) কোন পশুকে "তুন্দ্রার সম্রাট" বলা হয়?
উত্তর :- শ্বেত ভালুক।
২৯) তুন্দ্রা অঞ্চলের বরফের তৈরি গোলাকার ঘর গুলি কে কি বলা হয়?
উত্তর :- ইগলু।
৩০) সিল মাছের চামড়ায় তৈরি তাবুকে কি বলে?
উত্তর :- টিউপিক।
৩১) তুন্দ্রা শব্দটির অর্থ কি?
উত্তর :- শৈবাল।
৩২) ফিনল্যান্ডে কোন উপজাতির মানুষ বসবাস করে?
উত্তর :- ফিন।
৩৩) কায়াক কি?
উত্তর :- তুন্দ্রা অঞ্চলের অধিবাসীরা যাতায়াতের জন্য বরফের উপর সিল মাছের চামড়ায় তৈরি যে নৌকা ব্যবহার করে তাকে কায়াক বলে।
৩৪) একটি সরলবর্গীয় বৃক্ষের উদাহরণ দাও।
উত্তর :- পাইন।
৩৫) তুন্দ্রা অঞ্চলের অধিবাসীদের প্রধান খাদ্য কি?
উত্তর :- হরিণের দুধ, বেরি ফল ইত্যাদি।
প্রতিটি প্রশ্নের মান ২
১) মৌসুমী বিস্ফোরণ বলতে কী বোঝো।
উত্তর :- ভারত মহাসাগর, আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ভারতীয় উপমহাদেশে প্রচুর জলীয়বাষ্প সহ প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টি শুরু হয়। একে মৌসুমী বায়ুর বিস্ফোরণ বলে। এই বায়ু জলভাগের উপর দিয়ে আশায় এতে জলীয় বাষ্প প্রচুর থাকে এবং প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ সেমি বৃষ্টিপাত ঘটায়, যা "মৌসুমী বিস্ফোরণ" নামে পরিচিত।
২) চাঁদোয়া কি?
অথবা
চির গোধূলি অঞ্চল বলতে কী বোঝো?
উত্তর :-নিরক্ষীয় বৃষ্টি অরণ্য জলবায়ুতে সারা বছর ধরে অত্যধিক উষ্ণতা ও বৃষ্টিপাতের ফলে এখানকার উদ্ভিদ গুলি খুব ঘন সনিবিষ্টভাবে জন্মায়। এখানকার প্রত্যেকটি উদ্ভিদ তাদের ডালপালা ও পাতাগুলিকে প্রশস্তভাবে মেলে ধরায় ওপরে যে ছাতার মতো অংশের সৃষ্টি হয়, তাকে চাঁদোয়া বলে। এই কারনে এই অঞ্চলে দিনের বেলাতেও মৃদু অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশ থাকে। তাই এই বনভূমি অঞ্চলকে "চির গোধূলি অঞ্চল" বলা হয়।
৩) নিরক্ষীয় বৃষ্টি অরণ্যের ভেতরে সহজে প্রবেশ করা যায় না কেন?
উত্তর :- নিরক্ষীয় বৃষ্টি অরণ্যের উপরিস্তরে ডালপালা পাতা মিশে চাঁদোয়ার সৃষ্টি হয়, যার জন্য সূর্যের আলো অরণ্যের তলদেশে প্রবেশ করতে পারে না। তাই তলদেশ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়। আবার, সারা বছর বৃষ্টি হওয়ায় অরণ্যের মাটি স্যাঁতসেতে থাকে। এই আর্দ্র স্যাঁতসেতে পরিবেশে প্রচুর লতা গুল্ম জন্ম জন্মায়। তাই অরণ্যের ভেতরে সহজে প্রবেশ করা যায় না।
প্রতিটি প্রশ্নের মান ৫
প্রশ্ন ১ :- নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলের অবস্থান ও বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর :- অক্ষাংশ গত অবস্থান :- নিরক্ষরেখা দুই পাশে সাধারণত ৫° থেকে ১০° উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশের মধ্যে অবস্থিত অঞ্চলে এই জলবায়ু দেখা যায়।
ভৌগোলিক অবস্থান :- আফ্রিকার কঙ্গো বা জাইরে নদীর অববাহিকা, দক্ষিণ আমেরিকার আমাজন নদী অববাহিকা, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইনস, ভারত ও শ্রীলংকার দক্ষিণ অংশে, ইন্দোনেশিয়া, মধ্য আমেরিকার পানামা, কোস্টারিকা প্রভৃতি অঞ্চল এই জলবায়ুর অন্তর্গত।
জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য :- নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য গুলি হল -
১) লম্ব সূর্যরশ্মি :- নিরক্ষীয় জলবায়ুর অন্তর্গত দেশগুলিতে সূর্য সারা বছর লম্বা হবে কিরণ দেয়।
২) তাপমাত্রার দৈনিক প্রসর :- এই অঞ্চলে দৈনিক তাপমাত্রার প্রসর যথেষ্ট বেশি, গড়ে প্রায় ১৫° সেলসিয়াস।
৩) বাৎসরিক উষ্ণতার প্রসর :- সারা বছর ধরে এই অঞ্চলে উচ্চ তাপমাত্রা ও গ্রীষ্মকাল বিরাজ করে বলে বাৎসরিক উষ্ণতার প্রসর প্রায় ২° সেলসিয়াস।
৪) দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য :- এই অঞ্চলে দিন ও রাতের দৈর্ঘ্য প্রায় সমান। প্রায় ১২ ঘণ্টা দিন ও ১২ ঘণ্টা রাত্রি।
৫) বায়ু প্রবাহ :- এখানে উষ্ণ জলীয়বাষ্পপূর্ণ বায়ু হালকা হয়ে ঊর্ধ্বগামী হয় বলে বায়ুপ্রবাহের বেগ বোঝা যায় না, তাই এই অঞ্চল "নিরক্ষীয় শান্ত বলয়" নামে পরিচিত।
৬) অত্যাধিক বৃষ্টিপাত :- এই অঞ্চলে বছরে গড়ে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ সেমি বৃষ্টিপাত ঘটে। এই বৃষ্টি প্রতিদিন বিকেল ৩ টা থেকে ৪ টের সময় কিউমুলোনিম্বাস মেঘ থেকে ঘটে - যা 4 O' Clock Rain নামে পরিচিত।
প্রশ্ন ২ :- ক্রান্তীয় মৌসুমী জলবায়ুর অবস্থান ও প্রধান বৈশিষ্ট্য গুলি কি তা আলোচনা করো।
উত্তর :- অক্ষাংশগত অবস্থান :- পৃথিবীর উভয় গোলার্ধে ১০° - ৩০° অক্ষাংশে মৌসুমী জলবায়ু দেখা যায়।
ভৌগোলিক অবস্থান :- এশিয়ার ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, মায়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, দক্ষিণ চীন এবং ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জের কিছু অংশে মৌসুমী জলবায়ুর প্রভাব দেখা যায়।
জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য :- মৌসুমী জলবায়ুর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য গুলি হল -
১) প্রকৃতি :- উষ্ণ - আর্দ্র গ্রীষ্মকাল এবং শুষ্ক শীতকাল মৌসুমী জলবায়ুর প্রধান বৈশিষ্ট্য। এই জলবায়ু অঞ্চলে অবস্থিত দেশগুলিতে চারটি ঋতু লক্ষ্য করা যায়।
২) উষ্ণতা :- মৌসুমী জলবায়ুর গ্রীষ্মকাল সবচেয়ে উষ্ণ। শীতকালীন গড় উষ্ণতা এখানে ১৮° - ২২° সে।
৩) বায়ুর চাপ :- এই জলবায়ুতে শীত ও গ্রীষ্মে যথাক্রমে উচ্চচাপ ও নিম্নচাপ বিরাজ করে।
৪) বিপরীতমুখী বায়ুপ্রবাহ :- মৌসুমী জলবায়ু অঞ্চলে ঋতু ভেদে দুই বিপরীত ধর্মী বায়ু প্রবাহিত হয়।
৫) বৃষ্টিপাত :- মৌসুমী জলবায়ুতে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১০০ থেকে ১৫০ সেমি। বেশিরভাগ বৃষ্টিপাত বর্ষাকালে হয় ওখানে শীতকাল বৃষ্টিহীন থাকে।
৬) মৌসুমী বায়ুর খামখেয়ালিপনা :- মৌসুমী বায়ুর খামখেয়ালিপনার কারণে এই জলবায়ু অঞ্চলের বৃষ্টিপাত অনিয়মিত ও অনিশ্চিত। ফলে বন্যা ও করার প্রবণতা দেখা যায়।
প্রশ্ন ৩ :- ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর অবস্থান ও বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।
উত্তর :- অক্ষাংশগত অবস্থান :- উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে ৩০° - ৪৫° অক্ষাংশের মধ্যে এই জলবায়ু দেখা যায়।
ভৌগোলিক অবস্থান :- ইউরোপের ফ্রান্স, ইতালি, স্পেন, গ্রিস, পর্তুগাল; এশিয়ার তুরস্ক, ইজরায়েল, সিরিয়া এবং লেবানন এবং আফ্রিকার মিশর, মরক্কো, লিবিয়া প্রভৃতি দেশে ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য :- ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য গুলি হল -
১) প্রকৃতি :- প্রকৃতিগতভাবে ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ুতে সারা বছর মেঘ মুক্ত ও রৌদ্রজ্জ্বল আবহাওয়া বিরাজ করে।
২) আর্দ্র শীতকাল ও শুষ্ক গ্রীষ্মকাল :- এই অঞ্চলের শীতকালে আর্দ্র আবহাওয়া তৈরি হয়। অন্যদিকে গ্রীষ্মকালে শুষ্ক আবহাওয়া থাকে।
৩) উষ্ণতা :- ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে সারা বছর সমভাবাপন্ন জলবায়ু বিরাজ করলেও গ্রীষ্মকালে উষ্ণতা ২১° - ২৭° সে থাকে। শীতকালে তাপমাত্রা কমে যায়।
৪) বায়ুর চাপ :- ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ মন্ডলের অন্তর্গত হলেও এখানে গ্রীষ্মকালে উচ্চচাপ এবং শীতকালে নিম্নচাপ বিরাজ করে।
৫) বৃষ্টিপাত :- ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণ মাত্র ২৫ - ১৫০ সেমি। এই বৃষ্টিপাতের সবটাই প্রায় শীতকালে পশ্চিমা বায়ুর প্রভাবে ঘটে থাকে। তাই এই অঞ্চলকে "শীতকালীন বৃষ্টিপাতের দেশ" বলে।
৬) তুষারপাত :- এই অঞ্চলে তুষারপাত বিশেষ হয় না তবে ভূমধ্যসাগরের উত্তর উপকূল অঞ্চলে, ক্যালিফোর্নিয়ার মধ্যভাগে অল্প তুষারপাত হয়।
প্রশ্ন ৪ :- তুন্দ্রা জলবায়ু অঞ্চলের অবস্থান ও বৈশিষ্ট্য লেখো।
অথবা
তুন্দ্রা জলবায়ু অঞ্চলের শীতকালীন ও গ্রীষ্মকালীন জলবায়ু সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর :- অবস্থান :- কুমেরুবৃত্ত ও ঘুমেরুবৃত্তের নিকটবর্তী উত্তর আমেরিকার কানাডার উত্তরাংশ, আলাস্কা, ইউরেশিয়ার উত্তরাংশ, ইউরোপের নরওয়ে, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, এশিয়ার সাইবেরিয়া প্রভৃতি স্থানে তুন্দ্রা জলবায়ু দেখা যায়।
জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য :- এই জলবায়ুর উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য গুলি হল -
১) অতি শীতল শীতকাল :- এখানে বছরের ৮ - ৯ মাস শীতকাল। এই সময় তাপমাত্রা - ২০°সে থেকে - ৪০°সে তে নেমে যায়।
২) স্বল্প স্থায়ী গ্রীষ্মকাল :- দুই সপ্তাহব্যাপী বসন্তের পর তুন্দ্রা অঞ্চলে ২ থেকে ৩ মাসের জন্য স্বল্প স্থায়ী গ্রীষ্মকাল আসে।
৩) তাপমাত্রা :- শীতকালে তীর্যক সূর্য রশ্মি ও প্রচুর তুষারপাতের জন্য তাপমাত্রা অনেক কমে যায়। গ্রীষ্মকালে গড় তাপমাত্রা থাকে ১০° সে।
৪) বৃষ্টিপাত :- তুন্দ্রা অঞ্চলে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ মাত্র ২০ - ৩০ সেমি।
৫) বায়ু প্রবাহ :- তোমরা অঞ্চলে মেরু বায়ুর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। দীর্ঘ শীতকালে এখানে প্রবল তুষার ঝড়ের সৃষ্টি হয়, একে "পারগা" বলে।
৬) মেরুজ্যোতি :- একটানা অন্ধকার রাতে মাঝে মাঝে দুই - তিন ঘণ্টার জন্য ম্লান রংধনুর মতো আলোর ছটা দেখা যায়। একে মেরুজ্যোতি বলে।
প্রশ্ন ৫ :- তুন্দ্রা অঞ্চলের অধিবাসী এবং তাদের জীবনযাত্রা আলোচনা করো।
অথবা
তোমরা জলবায়ু এখানকার জীবনযাত্রাকে কিভাবে প্রভাবিত করে?
উত্তর :- অত্যন্ত প্রতিকূল জলবায়ু, কষ্টকর জীবনযাত্রার জন্য তুন্দ্রা অঞ্চল জনবিরল। এখানে বেশ কয়েকটি উপজাতি বসবাস করে। এরা হলো - গ্রিনল্যান্ড, কানাডা ও আলাস্কার উত্তরাংশে এস্কিমো, রেড ইন্ডিয়ান; সাইবেরিয়ায় স্যামোয়েদ ইয়াকুত; ল্যাপল্যান্ডে ল্যাপ; ফিনল্যান্ডে ফিন উপজাতির মানুষ বসবাস করে।
অধিবাসীদের জীবনযাত্রা :- তুন্দ্রা অঞ্চলের অধিবাসীদের জীবনযাত্রার উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য গুলি হল -
খাদ্য :- এখানকার অধিকাংশ উপজাতি শ্বেত ভালুক, বলগা হরিণ প্রভৃতি প্রাণীর মাংস এবং সিল, তিমি প্রভৃতি মাছ খেয়ে বেঁচে থাকে। অন্যান্য খাদ্যের মধ্যে দুধ ও বেরি ফল উল্লেখযোগ্য।
পোশাক পরিচ্ছদ :- প্রচন্ড শীতের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এখানকার অধিবাসীরা সীল মাছের চামড়ায় তৈরি জ্যাকেট পরিধান করে।
বাসস্থান :- এখনকার অধিবাসীরা শীতকালে একরকম গোলাকার বরফের তৈরি বাড়িতে বসবাস করে, একে ইগলু বলে। গ্রীষ্মকালে বরফ গলে গেলে শিং মাছের চামড়ায় তৈরি তাবুতে বাস করে, একে টিউপিক বলে।
জীবিকা :- তন্দ্রা অঞ্চলের অধিবাসীরা দুধ ও মাংসের জন্য বলগা হরিণ ও গৃহে কুকুর প্রতিপালন করে। সমুদ্রে কিংবা বরফের উপর সিল মাছ শিকার করে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন